
বগুড়ার ধুনট উপজেলার যমুনা নদীর পর এবার ইছামতী নদীও দখলে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা। নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় একদিকে যেমন ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারি নদী খনন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প, তেমনি সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের গুচ্ছগ্রাম, বসতভিটা ও ফসলি জমিও ভাঙনের কবলে পড়েছে।
জানা গেছে, নদীর নাব্য ফেরাতে সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্ব্বাবধায়নে ধুনট উপজেলায় নদী খনন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। গত তিন মাস আগে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন এক্সাভেটর মেশিন দিয়ে ধুনট পৌরসভার সরকারপাড়া এলাকার ইছামতী নদী খনন করে তীর বেঁধে চলে যায়।
এই সুযোগে পাশের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখি ইউনিয়নের প্রভাবশালী ব্যক্তি ধুনট পৌর এলাকার সরকারপাড়া ইছামতী নদীর মাঝে বাঁধ নির্মাণ করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর তলদেশ থেকে বালু তুলে বিক্রি করেছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে একই জায়গায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজগুলো ধসে যাচ্ছে। এছাড়া নদীর মাঝে বাঁধ নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নদীর পূর্বপাশের পাঁচগাছি গ্রামের গুচ্ছগ্রাম (সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প) ও নদীর পশ্চিম পাশের বসতভিটা ও ফসলি জমি ভাঙনের কবলে পড়েছে।
ধুনট সরকারপাড়া এলাকার চায়না বেগম নামে এক বৃদ্ধা আক্ষেপ করে বলেন, এভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হলে শেষ সম্বল ভিটেমাটিটুকুও নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
তবে শুধু ধুনট পৌর এলাকায় সরকারপাড়া ইছামতী নদীতেই নয়, একইভাবে চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের দিঘলকান্দি ও চৌকিবাড়ী গ্রামের নদীর তিনটি পয়েন্ট থেকে ড্রেজার মেশিনে এভাবেই বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে।
এর আগে উপজেলার যমুনা নদী দখলে নেন ভূমিদস্যুরা। ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের চৈবের মৌজা বালু মহাল ইজারা নিলেও পুরো যমুনা নদী দখলে নেন ভূমিদস্যুরা। কিন্তু যেখান থেকে বালু উত্তোলনের কথা, সেখানে চর জেগে ওঠায় নদীর তীরবর্তী বাঁধসংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ড্রেজার মেশিনে একই কায়দায় বালু উত্তোলন করে আসছেন তারা। এসব বিষয়ে একাধিক বার সংবাদ প্রকাশ হলেও টনক নড়েনি প্রশাসনের।
এ বিষয়ে ধুনট ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, ‘নদী খনন প্রকল্পের কথা শুনেছিলাম। তবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ যাযাদি