
অনলাইন ক্যাসিনো বা জুয়া একটি আতঙ্কের নাম। এক ধরনের কৌতূহল থেকে তরুণ প্রজন্ম এ জুয়ায় আকৃষ্ট হয়ে হাজার হাজার টাকা বিনিয়োগ করছে এবং এক পর্যায়ে খোয়াচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী, কর্মজীবী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ অনেকেই এখন অনলাইন ক্যাসিনো নামের জুয়ায় মত্ত হয়ে উঠছে। উপজেলার জুয়ারিরা ওয়ান এক্সবিট ও লাইনএক্সবিট নামে অনলাইন জুয়ায় সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট ও আসক্ত হচ্ছে।
উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাজারে আড্ডার আড়ালে চলে এই অনলাইন ক্যাসিনো নামের জুয়া। অনেকে জুয়ার টাকা জোগাড় করতে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জাড়িয়ে পড়ছে। বাড়ছে পারিবারিক কলহসহ নারী নির্যাতনের মতো নানাবিধ অপরাধ।
এসব ক্যাসিনোর মালিক কে বা কারা সেটা সবার অজানা থাকলেও চলছে হাজার হাজার টাকার বাজির খেলা। জুয়ার বিভিন্ন অ্যাপের ব্যবহার ও ক্যাসিনো খেলার নিয়ম ফেসবুক পেজ, ইউটিউবসহ নানা সাইডে বিজ্ঞাপন আকারেও ভাসতে দেখা যায়। টাকার বিনিময়ে গ্রুপের সদস্য হওয়ার শর্ত দেয়া হয়। চাওয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, নাম, বয়স, জন্ম তারিখ ও মোবাইল ফোন নম্বর। এসব তথ্য দিয়েই জুয়ার গ্রুপে মেলে সদস্য হওয়ার অনুমতি।
জানা যায়, জুয়ার এসব সাইটের অধিকাংশই পরিচালনা করা হয় ভারত, রাশিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া থেকে। বিদেশ থেকে পরিচালিত এসব সাইটের রয়েছে বেশ কয়েকটি বাংলাদেশী এজেন্ট। এসব এজেন্টদের মাধ্যমেই অনলাইন বাংলাদেশে ক্যাসিনো পরিচালিত হচ্ছে। অনেকের ধারণা, এসব জুয়ায় হাজার হাজার টাকা বিনিয়োগের রিপরীতে বিদেশেও তারা অর্থপাচার করছে। উপজেলার বিভিন্ন চা স্টলে, গুদাম ঘরের মেঝে, প্রতিষ্ঠানের ছাদে, খোলা মাঠে, এমনকি বাড়িতে শুয়ে শুয়ে চলছে ক্যাসিনো জুয়ার আসর। এসব আসর এখন মাদকের চেয়ে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার আনাচে কানাচে। এখনই যদি এটি প্রতিহত করা না হয়, তাহলে অচিরেই ঘোর অন্ধকারে ঢেকে যাবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নক্ষত্ররা। তাই, অনলাইন ক্যাসিনো নামক এসব জুয়া বন্ধে প্রশাসনের জোর নজরদারি কামনা করছেন বিশিষ্টজনরা।
এ বিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, ধুনটে অনলাইন ক্যাসিনো বা জুয়া সম্পর্কে আমি অবগত নই। দৃশ্যমান জুয়ার চেয়ে অনলাইন জুয়া খেলা শনাক্ত করা অনেকটাই জটিল। এ জুয়া সম্পর্কে এখন পর্যন্ত থানা পুলিশকে কেউ তথ্যও দেয়নি। সঠিক তথ্য পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নয়াদিগন্ত